ভগবান শব্দের অর্থ কি ? ভগবান আর ঈশ্বর কি এক ?

ভগবান শব্দের অর্থ কি ? ভগবান আর ঈশ্বর কি এক ?

ভগবান (সংস্কৃত: भगवान्) ভারতীয় ধর্মের মধ্যে উপাধি, যা ধর্মীয় উপাসনার মূর্তি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। হিন্দুধর্মে এটি দেবতা বা অবতারকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে বৈষ্ণবধর্মে কৃষ্ণের (বিষ্ণুর অবতার) জন্য এবং শৈবধর্মে শিবের জন্য। জৈনধর্মে শব্দটি তীর্থঙ্কর, বিশেষ করে মহাবীর ও বৌদ্ধধর্মে বুদ্ধকে বোঝায়। ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক অংশে, ভগবান হিন্দুদের কাছে সার্বজনীন ঈশ্বরের বিমূর্ত ধারণার প্রতিনিধিত্ব করে, যারা আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট দেবতার উপাসনা করে না।

༻ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ༻꧂

ভক্তি দর্শন সাহিত্যে, শব্দটি সাধারণত যে কোনো আরাধ্য দেবতার জন্য ব্যবহৃত হয়। নির্দিষ্ট দেবতা প্রায়শই ভক্তের এক ও একমাত্র ভগবান। ভক্তি ঐতিহ্যে ভগবান পুরুষ, এবং ভগবানের সমতুল্য নারী হল ভগবতী।

কিছু হিন্দুদের কাছে, ভগবান শব্দটি ঈশ্বরের বিমূর্ত, লিঙ্গহীন ধারণা।

বৌদ্ধধর্মের পালি ও সংস্কৃত শাস্ত্রে, শব্দটি গৌতম বুদ্ধকে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়, তাঁকে ভগব বা ভগবান ("প্রভু" বা "আশীর্বাদকৃত এক" শব্দগুচ্ছ দিয়ে অনুবাদ করা হয়)।ভগবান শব্দটি অন্যান্য থেরবাদ, মহাযান ও তন্ত্র বৌদ্ধ গ্রন্থেও পাওয়া যায়।


ভগবান’ শব্দটি সংস্কৃত, এবং এর অর্থ বিশ্লেষণ করে ব্যাসদেবের পিতা পরাশর মুনি বলেছিলেন,

(১) সমগ্র ঐশ্বর্য(ধনসম্পদ)

(২) সমগ্র বীর্য(শক্তিমত্তা)

(৩)সমগ্র যশ

(৪) সমগ্র শ্রী(সৌন্দর্য, রূপবত্তা)

(৫)সমগ্র জ্ঞান

(৬)সমগ্র বৈরাগ্য যাঁর মধ্যে পূর্ণ-রূপে বর্তমান, সেই পরম পুরুষ হচ্ছেন ভগবান। তবে ভগ শব্দের অর্থ ছয়টি ঐশ্বর্য(ষড়ৈশ্বর্য) এবং বান শব্দের অর্থ যুক্ত বা সমন্বিত। যেমন জ্ঞানবান অর্থ জ্ঞান-সমন্বিত, ধনবান শব্দের অর্থ ধন-সমন্বিত, তেমনি ভগবান(পরমশ্বের ভগবান) শব্দের অর্থ যিনি সম্পূর্ণভাবে ৬টি ঐশ্বর্য সমন্বিত। ঐ সমস্ত ঐশ্বর্য আর্কষণ করে- আকর্ষনীয় ব্যক্তিতে পরিণত হবার এটিই রহস্য। কারও যে পরিমাণ এই ঐশ্বর্য থাকে, তিনি ততটাই আর্কষণীয় হন। এ জগতে সকলেরই ঐসব ঐশ্বর্য কিছু কিছু পরিমাণে রয়েছে-কিন্তু কেউই সমগ্র ঐশ্বর্য-সম্পন্ন নয়। অনেক ব্যাক্তি রয়েছেন যাঁরা অত্যন্ত ধনবান,খুব বলবান, খুব রূপবান, অত্যন্ত যশস্বী, খুব জ্ঞানী এবং অত্যন্ত বৈরাগ্যবান, কিন্তু কেউই দাবী করতে পারে না যে তাঁর সমগ্র ধনৈশ্বর্য, সমগ্র বলবত্তা, সমগ্র সৌন্দর্য ইত্যাদি রয়েছে-একমাত্র পরমেশ্বর ভগবানেরই এইগুলি পূর্ণমাত্রায় রয়েছে। উপরোক্ত ছয়টি ঐশ্বর্য যাঁর পূর্ণমাত্রায় আছে, তিনি নিশ্চয় ‘সর্বাকর্ষক’।


এদিকে বর্তমান সমাজের জ্ঞানী মানুষেরা জানিয়েছেন, বাংলা ভাষা তে যা ভগবান , ইংরেজি ভাষাতে তা গড, তাই আবার উর্দুতে খুদা, আরবি ভাষায় আল্লাহ, তাই গ্রিক ভাষাতে থিওস। তাহলে আশা করি বুঝেই গেছেন হিন্দুরা কাকে ভগবান মনে করেন। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত সৃষ্টি যাকে সর্বশক্তি-সর্বগুন-অগুনের অতীত মেনে নেয় বা না নেয়, তিনিই সেই। এক একজনের তাকে উপলব্ধি করার পন্থা আলাদা তাই বলে তিনি আলাদা কখনও নন। সহজ ভাবে বলতে গেলে – যে বস্তু পান করে সনাতন ধর্মী তৃষ্ণা নিবারণ করে তাকে বলে জল, সেই একই বস্তু পান করে ইসলাম অবলম্বনকারী তাকে বলে পানি, সেই বস্তু একজন খ্রিস্টান পান করে তাকে বলে ওয়াটার।

ঈশ্বরকে ভগবান বলা যায় কিন্তু ভগবানকে ঈশ্বর বলা যায় না ।। পরমেশ্বর শ্রী নারায়নের  পূর্ণাবতার শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ঈশ্বর তাই তাকে তার ভক্তগন ভগবান বলেই ডাকে -- ব্রহ্মসংহিতার পঞ্চম অধ্যায়ের প্রথম শ্লোকেই ব্রহ্মাজী স্বয়ং বলেছেন, ঈশ্বরঃ পরম: কৃষ্ণ সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ। 

lord krishna| lord rama | is krishna a god | krishna lord | lord of hindusm| 


Join Our Facebook Community:👇

༻ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ༻꧂

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

༻হরেকৃষ্ণ꧂আপনার মতামত লেখুন--

নবীনতর পূর্বতন