চলুন জেনে নেয়া যাক পরমেশ্বর ভগবান শ্রী নারায়নের প্রধান দশটি অবতার সম্পর্কে
বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মালিক এবং পালনকর্তা শ্রী বিষ্ণুর প্রধান দশটি অবতার হলো - মৎস্য , কূর্ম , বরাহ , নৃসিংহ , বামন , পরশুরাম , রাম , বলরাম , বুদ্ধ এবং কল্কি ।
বিঃদ্রঃ দশ অবতারের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণের উল্লেখ নেই । এর কারণ হচ্ছে - অন্যান্য অবতার ভগবানের অংশবিশেষ ।
শ্রীমদ্ভাগবতপুরাণে বলা হয়েছে "কৃষ্ণস্তু ভগবান্ স্বয়ম্"
অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান শ্রী নারায়ণ । তাই দশ অবতারের মধ্যে শ্রীকৃষ্ণের উল্লেখ নেই। যদিও বললাম হলো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই কিন্তু তিনি হলেন ভগবান শ্রী বিষ্ণুরই অবতার এবং শ্রীকৃষ্ণ হলেন স্বয়ং বিষ্ণু তথা নারায়ণ।
পরমেশ্বর ভগবান শ্রী নারায়ণের দশম অবতার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা -
১✓ মৎস্য অবতার
কোটি কোটি বছর পূর্বে সত্যব্রত নামে এক ধার্মিক ছিলেন (উল্লেখ ; এক একটি যুগের বয়সসীমা কয়েক কোটি বছর তবে কলিযুগের বয়সসীমা ৪ লক্ষ ৩২ হাজার বছর তার মধ্যে সারে ৫ হাজার বছর গত হয়েছে)।
তাঁর রাজত্বকালে হঠাৎ পৃথিবীতে অনেক অন্যায় - অত্যাচার দেখা দেয় । রাজা তখন জগতের কল্যাণের জন্য ঈশ্বরের প্রার্থনা করেন। একদিন জলাশয়ে স্নানের সময় রাজা সত্যব্রতের নিকট একটি পুটি মাছ এসে প্রাণ ভিক্ষা চায় । রাজা কমণ্ডলুতে করে মাছটিকে বাড়ি নিয়ে এলেন ।
মাছটির আকার ভীষণভাবে বাড়তে থাকে । তাকে পুকুর , সরােবর , নদী , যেখানেই রাখা হয় , সেখানেই আর ধরে না । তারপর তিনি ভিষণ চিন্তিত হয়ে বড় সাগরে সেই মাছ টিকে ছেড়ে দেন এবং রাজা বুঝতে পারলেন , ইনি নিশ্চয়ই স্বয়ং পরম ব্রহ্ম নারায়ণ । রাজা তখন শ্রী নারায়নের স্তব স্তুতি করতে লাগলেন । এবং তারপর মৎসরূপী নারায়ণ রাজাকে বললেন, আগামী সাতদিনের মধ্যেই জগতে প্রলয় হবে । সে সময় তােমার ঘাটে একটি স্বর্ণতরী (সোনার নৌকা) ভিড়বে । তুমি বেল , সব রকমের জীবদম্পতি , খাদ্য - শস্য ও বৃক্ষবীজ সংগ্রহ করে তাদের নিয়ে সেই নৌকায় উঠবে । আমি তখন শৃঙ্গধারী মৎস্যরূপে আবির্ভূত হবাে । তুমি তােমার নৌকাটি আমার শৃঙ্গের সঙ্গে বেঁধে রাখবে । । কয়েকদিন পর মহাপ্রলয় শুরু হলাে । রাজা মৎসরূপী ভগবান শ্রীবিষ্ণুর নির্দেশ মতাে কাজ সম্পন্ন করলেন । ধ্বংস থেকে রক্ষা পেলেন শ্রী নারায়নের ভক্ত এবং তার সকল প্রজাগণ । এবং যেসকল প্রজাগণ এবং পৃথিবী বাসী অন্যায় ও অধর্মে লিপ্ত ছিল তাদের সকলেই মহা প্রলয়ে মৃত্যু ঘটেছে। এভাবেই জগতের পালনকর্তা শ্রী বিষ্ণু সমস্ত পাপীদের বিনাশ করে ধর্ম ও সৎ মানুষদের রক্ষা করেছেন।
২✓কুর্ম অবতার
পাতালবাসী অসুরেরা একবার দেবতাদের পরাজিত করে স্বর্গরাজ্য দখল করে । তখন ব্রহ্মা ও ইন্দ্র নিপীড়িত দেবতাদের সঙ্গে নিয়ে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মালিক এবং পালনকর্তা শ্রীবিষ্ণুর কাছে গেলেন । অসুরদের অত্যাচারের কথা বললেন । শ্রীবিষ্ণু দেবতাদেরকে অসুরদের সঙ্গে নিয়ে ক্ষিরােদ সাগর মন্থনের পরামর্শ দিলেন । তিনি বললেন, সাগর মন্থনের ফলে যে অমৃত উঠে আসবে , তা পান করে দেবতাগণ অসুরদের পরাজিত করার শক্তি ফিরে পাবেন । দেবতা ও অসুর সকলে মিলে সমুদ্র মন্থন করতে লাগলেন ।
অমৃতের সন্ধানে সুমুদ্র মন্থন কালে, বিশাল পর্বতটি সুমুদ্রে ডুবতে লাগল, কূর্মের রূপ ধরে ভগবান বিষ্ণু পর্বতের ওজন বহন করেছিলেন। এবং সকল কাজে শনিদেবের কর্ম অবশ্যই সম্পর্কিত থাকে কারণ ব্রহ্মা বিষ্ণু শিব তিনজন সূর্য পুত্র শনিকে কর্মফল দাতা এবং ন্যায়ের ভার দেন। এছাড়াও ভগবান শ্রী নারায়ন এর সেই কুর্ম অবতার আরো একবার সমগ্র পৃথিবীকে নিজের পিঠে বহন করেছিলেন যখন দ্বাপর যুগে ভগবান শ্রী বিষ্ণুর অবতার রাম চন্দ্র, লক্ষণ এবং তার বানর সেনাদের নিয়ে শ্রীরাম ভক্ত হনুমান নিজের শরীর পৃথিবীর থেকেও বিশাল আকার ধারণ করে তাদেরকে মহাকাশে ওঠায় এক মায়াবী রাক্ষসকে বধ করতে । তখন শ্রীরাম ভক্ত হনুমান এর বিশাল শরীরের ভারে রাবণ রাজ্য লঙ্কা ও পৃথিবী সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছিল তখন শ্রীরামের অনুরোধে ভগবান নারায়ন পুনরায় কূর্ম অবতার ধারণ করে পৃথিবী রক্ষা করেছেন। নারায়ন নারায়ন। হরেকৃষ্ণ।।
৩✓ বরাহ অবতার
পাতালের এক অসুর দেখতে বরাহ তথা বুনো সরের মতো দেখতে ছিল এবং সে বর প্রাপ্ত ছিল যে তার মৃত্যু যেনো তারই মতো দেখতে প্রাণীর হাতে হয়।
তারপর সেই অসুর যখন ব্রহ্মার থেকে পবিত্র বেদ চুরি করে পাতালে নিয়ে যায় এবং বেদ নষ্ট করার অনেক চেষ্টা করে কিন্তু সফল হয়নি, আর বেদ এক অসুরের কাছে ছিল বলে এদিকে পৃথিবীতে মহা প্রলয় সৃষ্টি হয়ে গেছে পৃথিবী সমুদ্রে তলিয়ে যাচ্ছে তখন ভগবান শ্রী নারায়ন সেই অসুরের মতই শরীর ধারণ করে তাকে বধ করে বেদ উদ্ধার করে এবং নিজের বড় বড় দাঁত দিয়ে পৃথিবীকে সমুদ্র থেকে উঠিয়ে রক্ষা করেন। নারায়ন নারায়ন। হরেকৃষ্ণ।।
৪✓ নৃসিংহ অবতার
শ্রীবিষ্ণু হিরণ্যাক্ষকে বধ করেছেন জেনে তার ভাই হিরণ্যকশিপু খুব কুদ্ধ হলেন । তিনি প্রচণ্ড বিষ্ণুবিরােধী হয়ে উঠলেন । কিন্তু তার একমাত্র পুত্র প্রহ্লাদ ছিল বিষ্ণুর পরম ভক্ত । বিষ্ণুভক্ত পুত্রের আচরণে হিরণ্যকশিপু রেগে গেলেন। অসংখ্য বার তাকে বিষ্ণু ভোজন করতে বারণ করলেও যখন তার পুত্র শুনছেনা দেখে পুত্রকে অসংখ্য বার হত্যা করার চেষ্টা করলেন । কিন্তু ভগবান বিষ্ণু প্রহ্লাদকে রক্ষা করলেন বারং বার।
হিরণ্যকশিপু ক্রুদ্ধ হয়ে পুত্রকে বললেন যদি তোমার ভগবান সব কিছুতেই সব জায়গাতেই আছেন যদি বিষ্ণু সত্যিই অবিনশ্বর পরমাত্মা হয়ে থাকে তাহলে কী সে ঘরের এই থাম্বেও আছে ? প্রহল্লাদ বলল হে আছে, তখন হিরণ্যকশিপু ক্রুদ্ধ হয়ে সেই থাম্বই ভেঙ্গে ফেললেন এবং দেখলেন সেখান থেকে অর্ধেক মানব শরীর আর অর্ধেক সিংহের মত দেখতে ভয়ঙ্কর প্রাণী বের হয়ে আসল এবং তাকে বধ করলেন নৃশিংহ দেব, কিন্তু তখনো নৃশিংহ দেবের রাগ কমেনা কারণ সে তার ভক্তকে অনেক কষ্ট দিয়েছে তাই নৃসিংহ দেব সিংহের মত গর্জন করতে থাকে এবং বিষ্ণুর এই রূপ এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে সমগ্র দেব দেবী ভয়ে ভিত হয়েছিল স্বর্গ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল। তখন তার ভক্ত প্রহল্লাদ তার স্তব স্তুতি করতে থাকে এবং সে নৃসিংহ দেব শান্ত হয়ে যায়। এভাবেই বিষ্ণু তার ভক্তকে রক্ষা করলেন। তাই কেউ শ্রীবিষ্ণুর ভক্ত বৈষ্ণব দের অপমান করবেন না কষ্ট দেবেন না নয়তো এই পৃথিবীতে না হোক কিন্তু নরকে কিংবা কল্কি অবতারের সময় আপনি পুনরায় বিষ্ণু ভক্ত বিরোধী হয়ে জন্ম নেবেন কল্কি ভগবানের হাতে মরার জন্য। যারা বিষ্ণু ভক্ত বৈষ্ণব তথা ইস্কন, গৌরিয় আরো অন্যান্য যেসকল বিষ্ণু ভক্ত আছে তাদেরকে নিয়ে যারা অপমান করে হাঁসি ঠাট্টা করে তাদের কপালে দুঃখ আছে হরেকৃষ্ণ।।
৫✓ বামন অবতার
বলি নামে অসুরদের এক রাজা ছিলেন । রাজা বলি দেবরাজ ইন্দ্রের কাছ থেকে স্বর্গরাজ্য কেড়ে নেন । দেবতারা স্বর্গ হারিয়ে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মালিক এবং পালনকর্তা শ্রীবিষ্ণুর কাছে গিয়ে সব বলেন । তখন দেবতাদের রক্ষায় বিষ্ণু বামন রূপ ধারণ করলেন । বলি ছিলেন একজন বড় দাতা এবং হৃদয়ে ভক্তিভাবও ছিল তার, একদিন বলি শ্রী নারায়নের যজ্ঞ করছিলেন তখন বামন দেব সেখানে হাজির হলে বলির স্ত্রী বললেন ইসস কত মায়াবি এবং সুন্দর এই ছোট্ট বালকটি যদি সে আমার পুত্র হতো আমার বুকের দুগ্ধ পান করাতাম তখন বামন দেব বলেন তথাস্তু (তাই বলির স্ত্রী দ্বাপর যুগে যোসদা হয়ে জন্ম নেন, যোসদা মাতাই সত্য যুগের বলির স্ত্রী)।
বামন দেব তারপর রাজা বলির নিকট ত্রিপাদ ভূমি চাইলেন সাথে সাথে অসুরদের গুরুদেব শুক্রাচার্য বললেন বলি মহারাজ না আপনি রাজি হবেন না কারণ ইনি কোনো বামন বালক নন ইনি স্বয়ং নারায়ন, ইনি নিশ্চয়ই ছলনা করে আপনাকে বধ করতে এসেছেন।
তখন বলি মহারাজ বললেন যদি নারায়ন এর হাতে মৃত্যু ঘটে তবে তো আমার মোক্ষ লাভ হবে এবং বলি ছিলেন অঙ্গরাজ কর্ণের মতো দাতা তাই তা দিতে রাজি হলেন । সঙ্গে সঙ্গে বামন দেব বিশাল আকার ধারণ করলেন । তিনি তার এক পা স্বর্গে এবং আর এক পা মর্ত্যে ( পৃথিবীতে) রাখেন ।
তৃতীয় পা রাখার জায়গা না থাকায় বলি তার মাথার উপর রাখতে বললেন । বামনরূপী ভগবান বিষ্ণু তখন বলির মাথায় পা রেখে তাকে পাতালে ঢুকিয়ে দিলেন । এভাবেই ভগবান বিষ্ণু একজন অহংকারী অত্যাচারি রাজাকে দমন করলেন । দেবতারাও তাদের হারানাে স্বর্গরাজ্য ফিরে পেলেন ।
নারায়ন নারায়ন। হরেকৃষ্ণ।।
৬✓ পরশুরাম অবতার
ত্রেতা যুগে এক সময়ে কার্তবীযার্জুন নামে ধার্মিক রাজা ছিলেন তিনি রাবণকে কয়েক বছর/দিন কারাগারে বন্দি করে রাখেন তিনি রাবণের থেকেও শক্তিশালী ছিলেন। রাবণের নানা স্বর্গের এক মুনি তিনি পৃথিবীতে নেমে কার্তবীর্যার্জুন ও রাবণের বন্ধুত্ব করে দেন এবং রাবণ ছাড়া পায়।
হঠাৎ একসময় রাজা কার্তবীর্যের নেতৃত্বে ক্ষত্রিয়েরা খুব অত্যাচারী হয়ে ওঠে । তখন সমাজে ধর্মভাব জাগাতে মহর্ষি ঋচীক তপস্যা করেন । তপস্যায় তুষ্ট হয়ে ভগবান বিষ্ণু ঋচীকের পুত্র জমদগ্নির পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর নাম ছিল ভৃগুরাম । ভৃগুরাম ছিলেন মহাদেবের উপাসক । মহাদেব তুষ্ট হয়ে তাঁকে একটি পরশু অর্থাৎ কুঠার দিলেন । এই পরশু হলাে তার অস্ত্র । পরশু হাতে থাকায় তার নাম হলাে পরশুরাম । তিনি ছিলেন এক ব্রাহ্মণ । একদা ক্ষত্রিয় রাজা কার্তবীর্যের সঙ্গে পরশুরামের পিতা জমদগ্নির বিবাদ বেঁধে যায় । কার্তবীর্য ধ্যানমগ্ন জমদগ্নিকে হত্যা করেন ।
পরশুরাম চিন্তা করেন একজন ধার্মিক রাজা কেনো এক ধ্যানমগ্ন ৠষির হত্যা করলেন নিশ্চয়ই কথাও অধর্ম আছে। পরশুরাম তাই নিজের পিতৃ হত্যার প্রতিশোধ না নিয়ে বরং সমগ্র সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করেন যদি আমার পিতা একজন এত মহান ৠষি হয়েও ক্ষত্রীয়ের নির্যাতনের শিকার হন তবে সাধারণ মানুষের কেমন অবস্থা করছে ক্ষত্রীয় রাজাগণ। তখন কুঠারের আঘাতে তিনি কার্তবীর্যকে হত্যা করেন । এবং সমগ্র বিশ্বের ক্ষত্রীয়দের বিনাশ করেন একাই, বিভিন্ন রাষ্ট্রের রাজাগণ তার ভয়ে ছদ্মবেশে পালিয়ে যাচ্ছিল। যেখানে একটা রাজ্য দখল করতে কয়েক লক্ষ সৈন্য প্রয়োজন হয় সেখানে পরশুরাম একাই সমগ্র বিশ্বের হাজার হাজার রাজ্য ধ্বংস করে দিচ্ছে নিমিষেই।
ভগবান পরশুরাম একুশবার অত্যাচারী ক্ষত্রিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের ধ্বংস করেন । পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসে । ধর্মের জয় হয় । ভগবান পরশুরাম কৃষ্ণের সময়ও জীবিত ছিলেন, অঙ্গরাজ কর্ণ ভগবান পরশুরাম এর কাছেই অস্ত্র শিক্ষা নেন। এবং শাস্ত্রে উল্লেখ আছে যে ভগবান পরশুরাম এবং হনুমান অমর, এনারা এখনও জীবিত কিন্তু আমরা মায়ার দ্বারা আবদ্ধ হওয়ায় তাদের দিব্য শরীর দেখতে পারিনা তবে কল্কি অবতারের সময় বা তারও পূর্বে তারা প্রকট হবেন। নারায়ন নারায়ন। হরেকৃষ্ণ।।
৭✓ রাম অবতার
ত্রেতা যুগে রাক্ষসরাজা রাবণ খুব শক্তিশালী ছিলেন তিনি ছিলেন মহাদেবের ভক্ত। বর্তমান কলিযুগেই কৈলাস পর্বত কত্ত বড় তাহলে কয়েক কোটি বছর পূর্বে কত্ত বড় ছিল কৈলাস পর্বত ভেবে দেখুন, রাবণ সেই কৈলাস পর্বত উঠিয়ে নিয়েছিল নিজের রাজ্য লঙ্কায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি দেবতাদের উপর অত্যাচার শুরু করেন । পৃথিবীতে অশান্তির সৃষ্টি হয় । তখন শ্রীবিষ্ণু রাজা দশরথের পুত্ররূপে রাম নামে আবির্ভূত হন ।
তিনি পিতৃসত্য পালনের জন্য স্ত্রী সীতা ও ভাই লক্ষ্মণকে নিয়ে বনবাসে যান । ছলনা করে বন থেকে রাবণ মাতা সীতাকে হরণ করেন । রাম ও রাবণের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ হয় । যুদ্ধে রাবণ সবংশে নিহত হন । রাম সীতাকে উদ্ধার করে নিজ রাজ্যে ফিরে আসেন । স্বর্গ ও পৃথিবীতে শান্তি ফিরে আসে ।
নারায়ন নারায়ন। হরেকৃষ্ণ।।
৮✓ বলরাম অবতার
দ্বাপর যুগে শ্রীবিষ্ণু বলরামরূপে অবতীর্ণ হন । তিনি ছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বড় ভাই । বলরাম গদাযুদ্ধে শ্রেষ্ঠ বীর । তার হাতে একটি লাঙল থাকত । এই লাঙল বা হল আকৃতির অস্ত্র দিয়ে তিনি যুদ্ধ করতেন । তাই তাকে বলা হয় হলধর । পৃথিবীর সমগ্র পাপীদের সেই হল দিয়ে কর্ষণ করে পৃথিবীতে শান্তি স্থাপন করেন।
অত্যাচারি কংশের বধ এবং অসংখ্য রাক্ষস বধ করেছেন মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করেছেন, মহাভারত যুদ্ধে ভগবান শ্রীকৃষ্ণই ছিলেন মূল যোদ্ধা যদিও তিনি অস্ত্র ধারণ করেননি কিন্তু যিনি এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মালিক তার জন্য তো নিজের কথার ছল, মায়া আর কপটতাই যথেষ্ট অস্ত্র তুললে এক মিনিটেই মহা মহিম ভিষ্ম, অঙ্গরাজ কর্ণ, গুরু দ্রোনকে বধ করে দিতেন এটা দুর্যোধনের মামা শকুনি জানত তাই ছলনা করে বলরামকে নিজের ছলনা দিয়ে ভুলিয়ে কৃষ্ণকে অস্ত্র ত্যাগ করার প্রতিজ্ঞা করিয়ে নেন হারামজাদা শকুনি মামা টা আমাদের। জয় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের। হরেকৃষ্ণ।।
৯✓ বুদ্ধ অবতার
খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে মানুষ যখন প্রচুর পরিমাণে জীব হত্যা করত গরু ছাগল কাটাত এবং সমাজে অধর্ম প্রচার করত সবাই তখন তাদের মাঝ থেকে হিংসা দূর করতে শ্রীবিষ্ণু রাজা শুদ্ধোদনের পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর নাম রাখা হয় পৌতম ।
পরে তিনি বােধি অর্থাৎ বিশেষ জ্ঞান লাভ করে গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিত হন । তিনি অহিংসার বাণী প্রচার করে মানুষকে শান্তির পথ দেখান । তাঁর ধর্মের মূল কথা ছিল , জীবসেবা এবং অহিংসা পরম ধর্ম । পশুহত্যা বন্ধ করেছিলেন। তিনি জীবসেবা ও অহিংসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছেন ।
পরে তিনি বােধি অর্থাৎ বিশেষ জ্ঞান লাভ করে গৌতম বুদ্ধ নামে পরিচিত হন । তিনি অহিংসার বাণী প্রচার করে মানুষকে শান্তির পথ দেখান । তাঁর ধর্মের মূল কথা ছিল , জীবসেবা এবং অহিংসা পরম ধর্ম । পশুহত্যা বন্ধ করেছিলেন। তিনি জীবসেবা ও অহিংসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছেন ।
১০✓ কল্কি অবতার
কৃষ্ণের যুগ অর্থাৎ দ্বাপর যুগ শেষ হবার প্রায় সারে ৫ হাজার বছর গত হয়েছে। কলিযুগের বয়সসীমা ৪ লক্ষ ৩২ হাজার বছর এর মধ্যে এখনো কলিযুগের ৪ লক্ষ ২৭ হাজার বছর বাকি রয়েছে।
কল্কি পুরাণে ও ভগবতম পুরাণে সত্যবতীর পুত্র মহর্ষি বেদব্যাস অর্থাৎ কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ যাকে কেন্দ্র করে গুরু পূর্ণিমা পালন করা হয় যিনি বেদকে লিপিবদ্ধ করেছেন, সকল পুরাণ ও মহাভারত এবং ভাগবদ গীতা লিখেছেন যিনি পরম দিব্য জ্ঞানী ছিলেন যিনি অতিত বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ ৩টিই দেখতে পেতেন সেই মহর্ষি বেদব্যাস লিখেছেন যে পরম ব্রহ্ম শ্রীকৃষ্ণের কল্কি অবতার কলিযুগের শেষের দিকে অবতীর্ণ হবেন এক শুদ্ধ ব্রাহ্মণ ঘরে, তিনি মা কালীর মত অস্ত্র খর্গ নিয়ে কলির সাথে যুদ্ধ করে কলি রাক্ষসকে বধ করবেন এবং সকল অধার্মিক মানুষদের বধ করে পুনরায় ধর্ম এবং সত্যযুগ স্থাপন করবেন।
বিঃদ্রঃ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের তথা নারায়ন এর ভক্ত হোন কৃষ্ণ নাম জপ করুন সুখী হোন কৃষ্ণের কৃপায় তার পরম ধাম বৈকুণ্ঠে তথা গোলোক বৃন্দাবনে গমন করুন অর্থাৎ মোক্ষ লাভ করুন এবং
মহর্ষি দয়ানন্দ স্বরস্বতীর ভণ্ড আর্য ও অগ্নীবিরের সদস্যদের থেকে দুরে থাকুন যারা বেদের মধ্যে অসংখ্য প্রক্ষিপ্ত বিষয় ঢুকিয়ে দিয়েছে বিষ্ণু তথা কৃষ্ণ ভক্তদের এবং অন্যান্য সকল দেব দেবীর বিরুদ্ধে ।
✅আরো পড়ুন :